আপনিও কি ভুলে যাচ্ছেন সবকিছু? সতর্ক হোন, এটি হতে পারে মস্তিষ্কের বার্তা!

“চাবি কোথায় রাখলাম মনে নেই!” কিংবা “ফ্রিজ খুলে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু কেন এসেছিলাম ভুলে গেছি!” এই ধরনের ভুলে যাওয়ার ঘটনা কি আপনার সাথেও ঘটছে? এমন অভিজ্ঞতা আজকাল শুধু বয়স্কদের নয়, বরং তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার পেছনে কী আছে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার অন্যতম কিছু কারণ হলো:
১. প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার:
আজকাল সবকিছু হাতের মুঠোয় মোবাইল, রিমাইন্ডার, গুগল। আগে যেসব বিষয় আমরা মস্তিষ্কে রাখতাম, এখন প্রযুক্তিই মনে করিয়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের স্মৃতি সংরক্ষণের ক্ষমতা ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে।
২. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ:
করোনা পরবর্তী সময়ে মানুষ নানা মানসিক চাপে ভুগছে। চাকরি, অর্থনীতি, সম্পর্ক সব মিলে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে।
৩. ঘুমের ঘাটতি:
নিয়মিত ও গভীর ঘুম না হলে, মস্তিষ্ক নতুন স্মৃতি গঠনে ব্যর্থ হয়। অনেকেই পর্যাপ্ত ঘুম না নিয়ে দিন পার করে দিচ্ছেন, যা দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে।
৪. অপুষ্টিকর খাবার:
মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ করতে প্রয়োজন ভিটামিন বি১২, ওমেগা-৩, আয়রনের মতো উপাদান। ফাস্টফুড ও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে এসব পুষ্টি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা।এটা কি ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝেইমার্স?
সব সময় ভুলে যাওয়া মানেই যে ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝেইমার্স, তা নয়। তবে যদি আপনি প্রতিদিনকার সাধারণ কাজ ভুলে যেতে থাকেন, পরিচিত মুখ চিনতে না পারেন কিংবা কথাবার্তায় অসংগতি আসে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।সমাধান কী হতে পারে?
সামাজিক মেলামেশা বাড়ানোএটা কি সাধারণ স্মৃতিভ্রম, নাকি গুরুতর কোনো সংকেত?
প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীলতা কমানো
মেডিটেশন ও মানসিক চাপ কমানোর চর্চা
পর্যাপ্ত ঘুম এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ
স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর অনুশীলন (Sudoku, পাজল খেলা ইত্যাদি)
স্মৃতি হচ্ছে আমাদের মন ও শরীরের আয়না
আমাদের স্মৃতিশক্তি বয়সের সাথে সাথে বদলায় এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি ভুলে যাওয়ার প্রবণতা জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তাহলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা জরুরি। স্মৃতিভ্রান্তির পেছনে মস্তিষ্ক হয়তো আপনাকে একটি বার্তা দিচ্ছে “নিজের দিকে একটু খেয়াল রাখো।”