মতলবের মাঠে দুলছে সোনালী ধানের শীষ, কৃষকের মুখে ফুটছে আশার হাসি

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন শুধুই সোনালী শীষের মিছিল। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় গড়ে উঠেছে এক অপূর্ব ফসলি চিত্র—যেখানে বাতাসে দুলছে হাজারো কৃষকের স্বপ্নের ধান। মাঠের সবুজ এখন হলুদের ছোঁয়া পেতে শুরু করেছে। মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা, তারপরই শুরু হবে ধান কাটার উৎসব।
১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা জুড়ে থাকা ধান গাছে এখন কলা পাকার লক্ষণ স্পষ্ট। কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায়। কেউ কাস্তে কিনছেন, কেউ তৈরি করছেন খলা। আবার কেউ খলা, গোলা, আঙিনা পরিষ্কার করছেন নতুন ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতিতে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারের বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা। সঠিক সময়ে সেচ, সার, কীটনাশকের সরবরাহ, অনুকূল আবহাওয়া এবং কৃষি অফিসের সক্রিয় ভূমিকা—সব মিলিয়ে মাঠে সৃষ্টি হয়েছে অনুকূল পরিবেশ।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে ৯৯৮৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন আশা করা হচ্ছে ৬৫,৪৯৫ মেট্রিক টন ধান এবং ৪৩,১৩০ মেট্রিক টন চাল।
কৃষকেরা জানাচ্ছেন, এবারের ফলন গতবারের তুলনায় অনেক ভালো। ছেংগারচর পৌরসভার আদুরভিটি গ্রামের কৃষক আয়নাল হোসেন প্রতিদিন মাঠে গিয়ে নিজের চোখে ধানের অগ্রগতি দেখে আসছেন। অন্যদিকে কৃষ্ণপুর গ্রামের কামাল হোসেন জানালেন, এবার ক্ষেতের ধানে কোনো রোগবালাই হয়নি। একরপ্রতি ৭০ মণ ফলনের আশা করছেন তিনি। ঠাকুর গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, শ্রমিক সংকট ও খরচ কিছুটা বেশি হলেও ফলন দেখে মন ভরে গেছে।
কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, কৃষকদের সহায়তায় সরকার বিনামূল্যে বীজ, সার, ও কীটনাশক দিচ্ছে এবং মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা।
এই সফলতার ধারায়, যদি প্রকৃতি সহায় হয়, তবে এবারের মৌসুমে কৃষকের ঘরে উঠবে সোনালী হাসি। আমরা সেই হাসির ঝিলিকই দেখতে চাই।