দুধ-খেজুর একসঙ্গে খাওয়ার আশ্চর্য উপকারিতা

সুস্থ শরীরের জন্য সুষম খাদ্য অত্যন্ত জরুরি। তবে কিছু কিছু খাবারের যুগলবন্দি দেহের জন্য বিশেষ উপকার বয়ে আনে। তেমনই একটি স্বাস্থ্যকর জুটি হলো দুধ ও খেজুর। প্রাচীনকাল থেকেই এই দুই উপাদান একসঙ্গে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। আধুনিক গবেষণাও দেখিয়েছে, নিয়মিত দুধ ও খেজুর একসঙ্গে খেলে শরীর পায় অতুলনীয় শক্তি ও সুরক্ষা।
দুধ ও খেজুর দুটোই শক্তির চমৎকার উৎস। খেজুরে থাকা উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক শর্করা দ্রুত শক্তি জোগায়, আর দুধের প্রোটিন ও ফ্যাট শরীরে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে। ফলে যারা সারাদিন কর্মচঞ্চল থাকতে চান, তাদের জন্য দুধ-খেজুরের সংমিশ্রণ অত্যন্ত উপকারী। সকালে কিংবা বিকেলে দুধের সঙ্গে কয়েকটি খেজুর খেলে শরীর থাকে সতেজ ও উদ্যমী।
শুধু শক্তি যোগানোর ক্ষেত্রেই নয়, হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্যও দুধ ও খেজুর অনন্য। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে, পাশাপাশি খেজুরে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে ভূমিকা রাখে। তাই শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত, হাড়ের সমস্যা প্রতিরোধে এই খাবারজুটির গুরুত্ব অপরিসীম।
এছাড়া হজমশক্তি বাড়াতেও দুধ ও খেজুর অসাধারণ কাজ করে। খেজুরের আঁশ হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, আর দুধের ল্যাকটোজ অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সহায়তা করে। ফলে নিয়মিত দুধ-খেজুর খাওয়ার অভ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং হজমতন্ত্র সুস্থ রাখে।
রক্তশূন্যতার ঝুঁকি কমাতেও এই দুটির জুড়ি মেলা ভার। খেজুরে থাকা উচ্চমাত্রার আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে, আর দুধে থাকা ভিটামিন বি-১২ ও ফোলেট রক্তের মানোন্নয়ন ঘটায়। ফলে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে এটি এক অত্যন্ত কার্যকরী খাবার।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দিক থেকেও দুধ-খেজুর অসাধারণ। দুটিতেই রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, যা দেহকে ভাইরাল সংক্রমণ, ঠান্ডা-কাশি ইত্যাদির হাত থেকে সুরক্ষা দেয়।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় ২-৩টি খেজুর দুধে ভিজিয়ে বা হালকা সেদ্ধ করে খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। চাইলে দুধে খেজুর ব্লেন্ড করে স্মুদি হিসেবেও উপভোগ করা যায়। তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে খেজুরের উচ্চ শর্করা মাত্রা বিবেচনা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শরীরকে আরও শক্তিশালী, সজীব ও সুস্থ রাখতে চাইলে আজ থেকেই দুধ ও খেজুর একসঙ্গে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।