বাবা হিসেবে সন্তানকে যে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখানো জরুরি

🕘 প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২৫ | অনলাইন ডেস্ক
এই দুনিয়া প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে।
বাবা-সন্তানের সম্পর্কেও যেন ব্যস্ততা এসে আড়াল ফেলেছে।
তবু কিছু কথা আছে ;
যা বাবা যদি না বলেন, সন্তানের ভেতরে অনেক কিছু অপূর্ণ থেকে যায়।
কারণ, বাবা শুধু অভিভাবক নন, সন্তানের জীবনের প্রথম হিরো, প্রথম শিক্ষক।
এখানে এমন ৫টি বিষয় তুলে ধরা হলো, যা প্রতিটি সন্তানের জানা উচিত তার বাবার মুখ থেকেই।
১. অনলাইনে দায়িত্ববান আর নিরাপদ থাকা শেখান
আজকের শিশুরা স্ক্রিনের আলোয় বেড়ে উঠছে।
ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম যেন তাদের দ্বিতীয় জগৎ।
কিন্তু এই জগতে লুকিয়ে আছে নানা ফাঁদ, ভয় ও শোষণ।
বাবা হিসেবে শেখান:
- কারও খারাপ আচরণে কীভাবে ‘না’ বলতে হয়
- কী শেয়ার করা নিরাপদ আর কী নয়
- প্রযুক্তি ব্যবহারে আসে দায়িত্ব সেটাও বোঝাতে হবে
ছোট বয়সে শেখা সচেতনতা, ভবিষ্যতের বড় রক্ষাকবচ।
২. আবেগ চেপে নয়, বলা যায় এই বিশ্বাস গড়ে তুলুন
অনেক বাবা বলেন, “এতো কাঁদছো কেন? শক্ত হও!”
কিন্তু তখনই সন্তানের মনে তৈরি হয় এক দেয়াল।
বরং বলুন:
- “আমি নিজেও ছোটবেলায় ভয় পেতাম”
- “কষ্ট লাগলে তুমি আমাকে বলতেই পারো”
এই একটি বার্তা সন্তানকে শেখাবে মন খারাপ হলে শেয়ার করাই সাহস, লুকিয়ে রাখা নয়।
৩. টাকার মূল্য শেখান, মজার ছলে
সন্তান পয়সা হাতে পেলে সঙ্গে সঙ্গে খরচ করে ফেলে?
এটাই স্বাভাবিক যদি না আপনি শেখান, সঞ্চয় কাকে বলে।
বলুন:
- “এই টাকাটা রেখে দাও, দু’সপ্তাহ পর তোমার প্রিয় জিনিস কিনব।”
- “যেটা দরকারি না, সেটা এখন কিনব না।”
মজার ছলে শেখা সঞ্চয় ভবিষ্যতে ওকে করবে পরিকল্পনাবান, আত্মনির্ভর।
৪. তুমি কোথা থেকে এসেছো গল্পটা ওকে বলুন
সন্তান শুধু আজকের নয়, সে এক ইতিহাসের উত্তরসূরি।
শোনান:
- দাদুর সংগ্রামের গল্প
- মায়ের ছোটবেলার মিষ্টি স্মৃতি
- পারিবারিক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর গর্ব
এই গল্পগুলো সন্তানকে দেবে আত্মপরিচয়ের শেকড়, আর ভালোবাসার বন্ধন।
৫. ছেলে-মেয়ে নয়, মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিন
মেয়ে মানেই রান্নাঘর, ছেলে মানেই বাইরের কাজ এই বিভাজন ভুলিয়ে দিতে পারেন আপনি, বাবা হয়ে।
বলুন:
- “তুমি (মেয়ে) নেতা হতে পারো”
- “তুমি (ছেলে) ঘরের কাজেও সমান যোগ্য”
আপনি যদি সমান মর্যাদা দেন, সন্তানও শিখবে
যোগ্যতা আর ন্যায়ের জায়গায় লিঙ্গ নয়, মানুষই মুখ্য।
কজন বাবা যদি সন্তানকে কেবল শাসনের চোখে না দেখে, হৃদয়ের কাছে টেনে নেন তবেই গড়ে ওঠে এমন ভিত্তি, যার ওপর দাঁড়িয়ে সন্তান একদিন নিজের পথ নিজেই চিনে নেয়। কথা বলুন, সময় দিন,পাশে থাকুন…
কারণ, বাবার মুখেই লুকিয়ে থাকে সন্তানের জীবনের সবচেয়ে বড় পাঠ।