পর্যাপ্ত পানি পান না করলে কী হতে পারে? জানুন গবেষণার ফলাফল

শরীরের সুস্থতার জন্য পানি অপরিহার্য। কিন্তু কম পানি পান করলে কি সত্যিই কিডনিতে পাথর হতে পারে? এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে শরীরে পানির ভূমিকা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সান ফ্রান্সিসকোর গবেষকরা ১৮টি গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যেখানে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত পানি পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। এমনকি ওজন নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিরোধেও পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- প্রতিদিন অন্তত আট কাপ পানি পান করলে কিডনি স্টোন হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
- খাবারের আগে পানি পান করা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকর।
- মাথাব্যথা সমস্যায় যারা ভুগছেন, তারা যদি টানা তিন মাস পর্যাপ্ত পানি পান করেন, তবে আরাম পাবেন।
- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে, আট সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন চার কাপ বেশি পানি পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ঘন ঘন মূত্রনালীর সংক্রমণের শিকার ব্যক্তিরা প্রতিদিন অতিরিক্ত ছয় কাপ পানি পান করলে সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
- নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় ভোগা তরুণরাও পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে উপকার পেয়েছেন।
গবেষকদের মতামত:
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের প্রধান বেনজামিন ব্রেয়ার বলেন, “আমরা পানির উপকারিতা নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা করেছি। গবেষণাগুলো থেকে জানা গেছে, নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে পানির উল্লেখযোগ্য উপকারিতা রয়েছে। তবে সবার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। যারা কিডনি স্টোন বা মূত্রনালীর সংক্রমণের ইতিহাস রয়েছে, তাদের জন্য পানিশূন্যতা ভয়াবহ হতে পারে। অন্যদিকে, যারা ঘন ঘন মূত্রত্যাগের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য কম পানি পান করাও উপকারী হতে পারে।”
এছাড়া, গবেষণার ফলাফল ‘জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে পানির উপকারিতা নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে। তবে গবেষকরা বলছেন, পানি পানের অভ্যাস ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে, তাই শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পানির পরিমাণ নির্ধারণ করাই সবচেয়ে ভালো উপায়।