ত্বকের লক্ষণে বুঝুন: কোলেস্টেরল বেড়েছে কিনা

সুস্থ থাকার জন্য জীবনযাত্রার অভ্যাসে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক যুগে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার কারণে উচ্চ কোলেস্টেরল একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোলেস্টেরল মূলত রক্তের চর্বি বা ফ্যাট, যা ভালো (HDL) ও খারাপ (LDL)—এই দুই ভাগে বিভক্ত। ভালো কোলেস্টেরল শরীরের জন্য উপকারী হলেও, খারাপ কোলেস্টেরল রক্তনালীতে জমে হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের ত্বক কোলেস্টেরলের মাত্রা সম্পর্কে অনেক কিছু জানান দেয়। তাই ত্বকের কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখলে সতর্ক হওয়া জরুরি—
🔹 চোখের চারপাশে হলুদ দাগ
উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে চোখের চারপাশে হলুদ দাগ বা আস্তরণ দেখা যেতে পারে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে জ্যানথেলাসমা নামে পরিচিত। এটি মূলত ত্বকের নিচে চর্বি জমার ফল। যদি এমন লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
🔹 ত্বকের রঙ পরিবর্তন
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে ত্বকের রং হলুদ বা হালকা কালচে হয়ে যেতে পারে। স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হঠাৎ পরিবর্তন হলে কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানো উচিত।
🔹 ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা ও সোরাইসিস
উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং সোরাইসিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে হাইপারলিপিডেমিয়া বলা হয়, যা ত্বকে ফুসকুড়ি ও রুক্ষভাব সৃষ্টি করে।
🔹 ত্বকে নীল বা বেগুনি দাগ
হাত, পা বা মুখে নীলচে বা বেগুনি দাগ কিংবা জালের মতো দাগ দেখা দিলে তা উচ্চ কোলেস্টেরলের ইঙ্গিত হতে পারে। রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হলে এমন দাগ সৃষ্টি হয়। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
🔹 ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া
খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে ত্বকে চুলকানি, জ্বালাপোড়া বা ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। যদি এসব সমস্যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়, তাহলে অবহেলা না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
✅ প্রতিরোধ ও করণীয়:
কোলেস্টেরলের সমস্যা এড়াতে সুষম খাদ্যগ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চলা জরুরি। পাশাপাশি, সময়মতো কোলেস্টেরল পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।