ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজায় সুস্থ থাকার ১০টি পরামর্শ

পবিত্র রমজান মাস সংযম ও আত্মশুদ্ধির সময়। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে যদি সঠিকভাবে খাদ্যাভ্যাস ও রুটিন মেনে না চলা হয়। রোজার সময় সুস্থ থাকতে চাইলে খাবার নির্বাচন ও জীবনযাত্রায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলা জরুরি। আসুন, জেনে নিই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ১০টি কার্যকরী পরামর্শ—
১. স্বাস্থ্যকরভাবে ইফতার শুরু করুন
খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা ভালো, তবে অতিরিক্ত চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। ভাজাপোড়া খাবারও কম খান, কারণ এটি রক্তচাপ ও সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
২. প্রাকৃতিক শরবত বেছে নিন
চিনিযুক্ত শরবতের পরিবর্তে বেল, তরমুজ, পাকা পেঁপে বা মাল্টার রস খেতে পারেন, তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া।
৩. আঁশযুক্ত খাবারকে প্রাধান্য দিন
ইফতারে সালাদ, ফল ও খেজুর রাখুন। এগুলো রক্তে সুগারের মাত্রা হঠাৎ বাড়তে দেয় না এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৪. সেহরিতে পর্যাপ্ত আমিষ খান
ডাল, ডিম, মাছ বা মুরগির মাংস সেহরিতে রাখুন। তবে গরুর মাংস সীমিত পরিমাণে (সপ্তাহে ১-২ দিন) খান।
৫. সবজি খান, তবে বুদ্ধিমানের মতো
সব ধরনের সবজি উপকারী, তবে রাতের বেলায় শাকজাতীয় খাবার কম খাওয়াই ভালো, কারণ এটি হজমে সমস্যা করতে পারে।
৬. ওষুধ ও ইনসুলিনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন
নিজের ইচ্ছামতো ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করবেন না। ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং ইফতারের ১০-১৫ মিনিট আগে ইনসুলিন নিন।
৭. সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করুন
সেহরির শেষভাগে খাবার খান এবং মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করুন। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে সুগার লেভেল কমে যেতে পারে, যা বিপজ্জনক হতে পারে।
৮. অতিরিক্ত খাওয়া ও কম খাওয়া এড়িয়ে চলুন
অতিরিক্ত খাওয়া যেমন ক্ষতিকর, তেমনি সেহরিতে এক গ্লাস পানি খেয়ে রোজা রাখা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (সুগারের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যাওয়া) হতে পারে।
৯. রক্তে সুগারের মাত্রা কমলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে সবসময় গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি বা অন্য বিকল্প রাখুন। রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি কমে গেলে রোজা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিন।
১০. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
সেহরি ও ইফতারের মাঝে বেশি করে পানি পান করুন, যাতে শরীর ডিহাইড্রেট না হয়।
এই পরামর্শগুলো মেনে চললে ডায়াবেটিস রোগীরাও রোজায় সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকতে পারবেন। সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন!