স্বাস্থ্য খাতে বড় অঙ্কের বাজেট কমার প্রস্তাব

আগামী অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বড় অঙ্কের বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব এসেছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে চলমান ১৪টি প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত বরাদ্দ ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫১০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং ১ হাজার ১০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বৈদেশিক সহায়তা থেকে ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ১৫৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। সেই তুলনায় আগামী বছরে বরাদ্দ প্রায় ৫ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা কমছে। এমনকি সংশোধিত এডিপির তুলনায়ও ৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা কমবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ১৫ এপ্রিল পরিকল্পনা কমিশনে এ প্রস্তাব পাঠিয়েছে, যেখানে ২৭টি অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্প যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
তবে বিশ্লেষকরা বিষয়টিকে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছেন। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমানো কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। অর্থ মন্ত্রণালয় প্রায়ই বলে, বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় হয় না, তাই বরাদ্দ বাড়িয়ে লাভ নেই। কিন্তু বরাদ্দ কমানোর চেয়ে ব্যয়ের কাঠামো পুনর্বিন্যাস ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করাই গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দরিদ্র মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য যেসব কর্মসূচি আছে, সেগুলো মানুষের জীবনে বড় সহায়তা দেয়। এসব কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমালে শিশুদের বিকাশ ও পরিবারের সহায়তা প্রভাবিত হবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলে উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হয় এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয়ও কমে আসে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের বাজেটে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের মানিকগঞ্জ প্লান্ট প্রকল্পে বরাদ্দ ১ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২০০ কোটি টাকা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও জামালপুর নার্সিং কলেজ প্রকল্পে বরাদ্দ ৩৫০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২০০ কোটি টাকা এবং পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ প্রকল্পে ২০৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা খাতের এই বাজেট সংকোচন নিয়ে নানা মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।