UK - Bangla

লন্ডন থেকে বাংলাদেশের সম্ভাব্য রাজনৈতিক নেতা: জাহিদুর রহমানের অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা

লন্ডনের প্রানবন্ত বাংলাদেশি কমিউনিটিতে জাহিদুর রহমান তার উদ্যম, সমাজসেবা এবং ব্যবসায়িক দক্ষতার জন্য সুপরিচিত। এক ব্যস্ত ক্যাফেতে আমাদের আলাপচারিতায়, এই সফল ব্যবসায়ী—যার শেকড় বাংলাদেশের মাটিতে গভীরভাবে প্রোথিত—তার সাম্প্রতিক এক ভিন্নধর্মী যাত্রার কথা শেয়ার করলেন। লন্ডনে স্থিতিশীল জীবন এবং সফল ব্যবসার পরেও কেন তিনি বাংলাদেশে রাজনীতির জটিল পথে আসতে আগ্রহী? তার উত্তরে পাওয়া গেলো এক সরল কিন্তু গভীর সত্য: “কারণ কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতে হবে।”

জাহিদুর রহমান কে রাজনীতিতে নিয়ে আসা প্রথম প্রেরণা ছিল গণ অধিকার পরিষদ (জিএপি)এর। ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি প্রথমে কোটা সংস্কারের আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়েছিল, যা দ্রুত বৃহত্তর সামাজিক ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে রূপান্তরিত হয়। জাহিদুর রহমান অন্যান্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের মতোই, দূর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। কিন্তু জিএপির উত্থান—এবং এর নেতা নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে শুরু হওয়া যুব আন্দোলন—তার অন্তরের এক গভীর আকাঙ্ক্ষাকে জাগিয়ে তোলে।

জাহিদুর বললেন, “জিএপি অন্য দলের মতো নয়। এটি যুবকদের দ্বারা পরিচালিত, স্বচ্ছ, এবং রাজনীতির সাধারণ টিকিট কেনাবেচার প্রথা থেকে মুক্ত।” বাংলাদেশে প্রচলিত রাজনীতির সিস্টেমে মুলত প্রার্থীরা টিকিট কেনার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে, যা দুর্নীতির প্রজ্বলন ঘটায়। কিন্তু জিএপি এমন একটি মঞ্চ যেখানে তিনি নীতি ও আদর্শে অবস্থানে দাড়িয়ে পরিবর্তনের জন্য সবসময় কাজ করতে পারবেন।

বাংলাদেশের যুবসমাজের সঙ্গে জড়িত জিএপির গল্পটি একটি পরিবর্তনের সোপান। ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে শুরু হওয়া যুব নেতৃত্বের যেই বিপ্লবী আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিশ্চিত হয়, যা দেশের যুবসমাজের শক্তিকে তুলে ধরেছিল। নুরুল হক নুর, জিএপির নেতা, তরুণদের প্রতীক হয়ে ওঠেন। তার রাজনৈতিক অবস্থানের দৃঢ়তায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন জাহিদুর সহ অসংখ্য মানুষ।

জাহিদুর আরও বললেন, “এই যুব নেতৃত্বের বিপ্লব বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তারা শুধু ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের জন্য দাঁড়িয়েছে।” জাহিদুরের জন্য এটি শুধু পরিবর্তনের ঢেউয়ে সাঁতার কাটার বিষয় নয় বরং সেই পরিবর্তনের অংশ হওয়ার ইচ্ছা।

জাহিদুর স্পষ্টই জানালেন, “আমাকে এটা করতে হবে না। আমি লন্ডনে থেকেও সমাজসেবা করতে পারতাম। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমি বাংলাদেশে থাকতে চাই, আমার দেশের মানুষের সঙ্গে থেকে সেই পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে চাই।” তার চোখে বাংলাদেশের রাজনীতি শুধুমাত্র ক্ষমতা নয় বরং নীতির দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত।

জাহিদুরের ইচ্ছা শুধুমাত্র রাজনৈতিক সাফল্যের নয়, বরং বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার। “বাংলাদেশকে এমন নেতার প্রয়োজন যারা আইনের শাসনকে রক্ষা করবে এবং জনগণের অধিকারকে সম্মান করবে।” এটি একটি প্রায় অসাধারণ স্বপ্ন, বিশেষত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে।
তিনি বিশ্বাস করেন যে বাংলাদেশে এমন একটি সরকার থাকা উচিত যা জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে।

তার লক্ষ্য খুবই চ্যালেঞ্জিং, তবে তিনি জানেন, প্রতিটি যাত্রার শুরু কোথাও না কোথাও থেকে হয়। বাংলাদেশের জন্য এমন পরিবর্তন দরকার, এবং জাহিদুর রহমানের মতো মানুষরা আশা এবং দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে এগিয়ে আসেন।

এক বিখ্যাত বাঙালি কবির লাইন দিয়ে জাহিদুরের পথচলাকে সংক্ষেপে তুলে ধরা যায়:
“জ্ঞানী হওয়া মানে শুধু নিজেকে জানা নয়, সমাজকে আলোকিত করা।”

এই দর্শনে বিশ্বাসী জাহিদুর রহমানের যাত্রা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয় বরং দেশের জন্য আলোর পথ দেখানো। বাংলাদেশের পরিবর্তনের জন্য সাহসী এবং নীতিগত নেতৃত্বের প্রয়োজন, এবং জাহিদুর রহমান তার সেই নেতৃত্বের উদাহরণ হয়ে উঠছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button