ভারতেও চাপে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা

🕒 প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২৫ | ✍️ অনলাইন ডেস্ক
নিরাপত্তার আশায় ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী। তবে সেখানেও এখন তারা পড়েছেন নতুন দুশ্চিন্তায়। ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের কারণে এবার তাদেরকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজ দলের প্রধান শেখ হাসিনার পক্ষ থেকেই।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের দ্রুত দেশে ফিরে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে দলে সৃষ্টি হয়েছে উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ভারতের নাগরিকত্ব আইন কার্যকরের পর দেশটির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোনো বিদেশি অবৈধভাবে বসবাস করতে পারবে না। এমনকি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী থেকেও মৌখিকভাবে অনেককে সতর্ক করা হয়েছে।
ভারতে আত্মগোপনে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“এখানে বেশিদিন থাকা যাবে না। ধারণা করছি, আগামী দুই মাসের মধ্যেই ভারত বড় ধরনের অভিযান চালাতে পারে। আমাদের বলা হচ্ছে, স্বেচ্ছায় না গেলে গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানো হবে।”
তবে দেশে ফিরে যাওয়াও অনেকের কাছে নিরাপত্তা নয়, বরং নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অধিকাংশ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেই দেশে একাধিক মামলা রয়েছে, রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও। এছাড়াও জনরোষ এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতিশোধের আশঙ্কা রয়েছে প্রবলভাবে।
এই অবস্থায় নেতাকর্মীদের মনে এখন মূল প্রশ্ন দেশে ফিরলে কি কোনো ধরনের আইনগত সহায়তা বা নিরাপত্তা তারা পাবেন? পুনর্বাসনের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না এসব প্রশ্নের কোনো পরিষ্কার উত্তর এখনো মেলেনি দলীয় হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত শুধু অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর দিকেই নজর দিচ্ছে না, বরং নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রক্রিয়াও কঠোর করে তুলেছে। ফলে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার পথও হয়ে উঠেছে প্রায় অসম্ভব।
দলের ভেতরেই অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন
“যখন নেত্রী নিজে নিরাপদে অবস্থান করছেন, তখন সাধারণ নেতাকর্মীদের ফেলে দেওয়া হচ্ছে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মুখে।”
কারও মতে, “যাদের নেত্রী শেখ হাসিনা, তাদের আর শত্রুর দরকার নেই।”
সার্বিকভাবে দেখা যাচ্ছে, দেশেই হোক বা বিদেশে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর জন্য বর্তমান সময়টি কেবল ভয় আর অনিশ্চয়তার গল্পই লিখে চলেছে।