Religion

কুরবানি কাদের ওপর ওয়াজিব? জেনে নিন বিস্তারিত বিধান

কুরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি সামর্থ্যবান মুসলিমদের জন্য ওয়াজিব এবং ত্যাগ ও আনুগত্যের এক অনন্য নিদর্শন। নবী ইব্রাহিম (আ.)-এর সুন্নত হিসেবে প্রবর্তিত এই ইবাদতের মাধ্যমে গরিব-দুঃখী ও প্রতিবেশীর উপকার সাধিত হয়, পাশাপাশি শাআইরে ইসলাম তথা ইসলামের প্রতীকী বিধানের প্রকাশ ঘটে।

আল্লাহ তাআলা বলেন –

“অতএব আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন ও কুরবানি দিন।”
(সূরা কাউসার: ২)

কারা কুরবানি দেওয়ার যোগ্য?

কুরবানি ওয়াজিব তাদের ওপর, যারা,

  • মুসলিম, প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন।
  • ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন।

নেসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে কী বোঝায়?

নেসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে বোঝানো হয় ,

  • সোনা: সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি
  • রূপা: সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি
  • অথবা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ টাকা-পয়সা, অলঙ্কার, বাড়তি জমি-বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ইত্যাদি।

একাধিক সম্পদ মিলে যদি সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার সমমান হয়, তবুও কুরবানি ওয়াজিব হবে। যেমন: কিছু স্বর্ণ + কিছু টাকা = নেসাব পরিমাণ সম্পদ।

পরিবারের একাধিক সদস্যের ওপর কুরবানি ওয়াজিব হলে?

একান্নভুক্ত পরিবারে যদি একাধিক সদস্যের কাছে পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তবে সবার জন্য আলাদা কুরবানি করা ফরজ। এক পশু দিয়ে সবার দায়িত্ব আদায় হবে না। সেক্ষেত্রে:

  • প্রত্যেকের জন্য একটি করে পশু কুরবানি করতে হবে
    অথবা
  • একটি বড় পশুতে সবার জন্য আলাদা আলাদা অংশ নিতে হবে

নেসাব থাকতে হবে কতদিন?

নেসাব পুরো বছর থাকা জরুরি নয়। কেবল কুরবানির তিন দিনের (১০-১২ যিলহজ্ব) মধ্যে যেকোনো সময় যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া যায় যদি ১২ তারিখ সূর্যাস্তের ঠিক আগে হয় তবুও কুরবানি ওয়াজিব হয়ে যাবে।

এই বিধানগুলো জানা থাকলে কুরবানির সময় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সঠিকভাবে কুরবানির গুরুত্ব বুঝে তা আদায় করার তাওফিক দিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button