Bangladesh - EnglishWorld - Bangla

ইসরায়েলের অবরোধে বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত, ফিলিস্তিনিদের আকুতি: ‘আমি শুধু বাড়ি ফিরতে চাই’

গাজার উত্তরাঞ্চলে নিজেদের বাড়ি ফিরতে মরিয়া ফিলিস্তিনিরা। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার মুখে তাঁদের অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ইসরায়েলের সেনারা মধ্য গাজার আল-রশিদ সড়ক অবরোধ করে রাখায় উত্তর গাজার পথে যাত্রা শুরু করা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আটকে পড়েছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ওপর এই কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এর আগে হামাস চার ইসরায়েলি নারী সেনাকে মুক্তি দিলে বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। তবে এরপরই চুক্তিভঙ্গের অজুহাতে গাজাবাসীদের যাত্রা পথে বাঁধা দেয় ইসরায়েলি বাহিনী।

বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের একজন, মোহাম্মদ ইমাদ আল-দীন বলেন, “আমি জানি, আমার বাড়ি হয়তো ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু যা কিছু অবশিষ্ট আছে, সেখানেই তাঁবু টানিয়ে থাকব। আমার সন্তানদের জন্য কিছু জোগাড় করতে হবে। আমি শুধু বাড়ি ফিরতে চাই।”

মোহাম্মদ বলেন, “আমার সেলুন ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু আমি তা মেরামত করে আবার কাজ শুরু করতে চাই। এই অবস্থায় আমি প্রচুর ঋণে জর্জরিত এবং সন্তানদের ন্যূনতম চাহিদাও পূরণ করতে পারছি না।”

আরেক ফিলিস্তিনি নারী লুবনা নাসের, যিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে করিডরে অপেক্ষা করছেন, বলেন, “প্রায় ১১ মাস ধরে আমার স্বামীকে দেখিনি। আমার মেয়েরা তাদের বাবার সঙ্গে দেখা করতে চায়। আমি অপেক্ষা করব যতক্ষণ না আমাদের ফিরতে দেওয়া হয়।

ইসরায়েলি সেনাদের চেকপয়েন্টের কাছে অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। এতে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, পরিস্থিতি দেখে তাঁদের হুমকি মনে হওয়ায় গুলি চালানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের বাড়ি ফেরাতে কাতার ও মিসর কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল এখনো উপকূলীয় ওই সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। নেৎজারিম করিডরের ওপর নির্ভর করেই ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার পথ নির্ভরশীল।

উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা এক ফিলিস্তিনি মা বলেন, “আমি এখানে থাকব। যত কাছেই হোক, আমার মেয়েদের বাবার সঙ্গে দেখা করানোর জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা প্রথম দফায় ফিরতে চাই।”

অবরোধের মধ্যে আটকে থাকা হাজারো ফিলিস্তিনির এখন একটাই চাওয়া—নিজেদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি কিংবা প্রিয়জনদের কাছে ফেরা। গাজার এই বাস্তুচ্যুত মানুষের আর্তি যেন যুদ্ধের নিষ্ঠুর বাস্তবতার এক বেদনাদায়ক চিত্র।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button