আখি রেমার গারো গ্রামের এক নারীর সাহসিকতায় গড়া স্বপ্নের যাত্রা

নেত্রকোনা জেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম দাখিনাইল। এখানেই বাস করেন গারো সম্প্রদায়ের এক পরিশ্রমী নারী—আখি রেমা। প্রতিদিনের কাজের মাঝে মুখে লেগে থাকে একরাশ হাসি আর পানের লাল রঙে ভরা প্রাণবন্ত মুখ। নিজের কথা যখন বলেন, তখন বোঝা যায়—তিনি কেবল একজন খামারি নন, বরং একজন গর্বিত নারী যিনি স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে নিজের পরিবারের স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন।
আখি রেমা সবসময় চেয়েছেন সংসারের দায়িত্ব কেবল স্বামীর কাঁধে না দিয়ে নিজেও কিছু করতে। তিনি চেয়েছেন পরিবারের ভালো সময়ের পেছনে নিজের অবদান রাখতে। ঠিক তখনই Futuredesh তার পাশে দাঁড়ায়।
Futuredesh কীভাবে আঁখির পাশে দাঁড়ায়
Futuredesh আঁখিকে দুটি গরু প্রদান করে, যার সাথে যুক্ত ছিল প্রতিদিনের খাবার, নিয়মিত পশু চিকিৎসা, ও সময়মতো খামার সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা। এটি কেবল একটি ইনভেস্টমেন্ট নয়—এটি ছিল আঁখির মতো পরিশ্রমী মানুষের পাশে থেকে তাদের সামর্থ্যকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা।

শুরু থেকেই আঁখি দায়িত্ব নিয়ে গরুগুলোর দেখভাল শুরু করেন। তিনি প্রতিদিন গরুর খাওয়ানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও যত্নে সময় দেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তার খামারের গরুগুলো হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যবান ও সচল। ক্লাস্টার পর্যায়ের তথ্য বলছে, আখির গরুর বৃদ্ধির হার অনেকটাই ভালো, যা তার পরিশ্রমের বাস্তব ফল।
আখির ভূমিকায় ক্লাস্টার জুড়ে অনুপ্রেরণা
আখির বোন জিনিয়া রেমা, বর্তমানে Futuredesh-এর Birishiri ক্লাস্টারের ফার্মার সাপোর্ট ওয়ার্কার (FSW) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দুই বোন মিলে আজ অনেকটা পথ এগিয়ে গেছেন।
আঁখি শুধু নিজের গরু নিয়েই থাকেন না, বরং ক্লাস্টারের অন্যান্য কাজেও যুক্ত হন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। তার এই অংশগ্রহণ তাকে শুধু একজন সফল ফার্মারই নয়, বরং Birishiri অঞ্চলের এক অনুপ্রেরণাদায়ী মুখে পরিণত করেছে।
একজন আখি, অনেক নারীর আশা
আখি বলেন,
“আমি চাইছিলাম সংসারে আমারও একটা ভূমিকা থাকুক এবং আমার কাজের মাধ্যমে আর্থিকভাবে আত্মনির্ভর হওয়ার চেষ্টায় ছিলাম আর এই সময়েই আমার বোনের মাধ্যমে জানতে পারি ফিউচার দেশের কথা, Futuredesh পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বলেই আজ আমি পারছি আর ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই”
Futuredesh-এর লক্ষ্য
Futuredesh সবসময়ই বিশ্বাস করে “Make Money, Do Good”—মানে শুধু আয় নয়, ভালো কিছু করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আঁখি রেমার মতো ফার্মারদের সাথে কাজ করে আমরা বাংলাদেশে একটি টেকসই ও উন্নয়নশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। আমাদের মডেল শুধুই ফার্মারদের লাভবান করে না, বরং সমাজে পরিবর্তন আনতেও সাহায্য করে।

আঁখি রেমার গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়—যখন একজন মানুষ সুযোগ পায় এবং কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়, তখন সেই মানুষ নিজের জীবনের সাথে সাথে সমাজেরও একটি পরিবর্তনের গল্প লিখে ফেলতে পারে।