নির্বাচনের দাবি করা সম্ভব, কিন্তু নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দেওয়া যায় না — জামায়াত আমির

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তারা দেশের একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান, তবে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া তা সম্ভব নয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা নির্বাচনের দাবি জানাতে পারি, তবে তার নির্দিষ্ট দিন-তারিখ ঠিক করে দিতে পারি না।”
বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, বিদেশি কূটনীতিকরা বাংলাদেশের নির্বাচনের সময় ও ধরন জানতে চেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, দেশে যে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দাবি রাখে:
১. গৃহীত সংস্কার বাস্তবায়ন – যা তারা পূর্বে জাতীয়ভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব আকারে জমা দিয়েছেন।
২. নিহত ও আহতদের বিচার নিশ্চিত করা – যারা সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন বা পঙ্গু হয়েছেন, তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত জনগণের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়।
৩. রাজনৈতিক সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি – একে অপরকে সম্মান করা এবং ফলাফল-নির্ভর মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেন তিনি।
শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার ছাড়া আয়োজিত কোনো নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, বরং তা অতীতের মতই বিতর্কিত হবে। এই সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। আর এ কারণেই তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে বাস্তবতা মেনে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি আরও জানান, নির্বাচনের সময় সম্পর্কে বিদেশিদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতিপূর্বে জানিয়েছেন—ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচন হতে পারে। এই সময়কে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং সংস্কার কার্যকর করার জন্য যথোপযুক্ত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গতকাল জামায়াতের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী সচিবের সাক্ষাৎ হয়েছে বলেও জানান শফিকুর রহমান। সেখানে রোজার আগে, অর্থাৎ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা ওঠে। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, “শর্ত পূরণ ছাড়া কোনো সময়ই নির্ভরযোগ্য নয়।”
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, প্রচার সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দসহ শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ।