সাবিনা ইয়াসমীনের মঞ্চে ফেরা: ছয় দশকের সংগীতযাত্রার উদ্যাপন
বাংলা সংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমীন আবারও মঞ্চে ফিরছেন! এক বছরেরও বেশি সময় পর আগামীকাল শুক্রবার রাজধানীর একটি তারকা হোটেলে তাঁর কণ্ঠে বেজে উঠবে শ্রোতাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকা সুর। “আমাদের সাবিনা ইয়াসমীন: আমি আছি থাকব” শীর্ষক এই বিশেষ সংগীত সন্ধ্যা আয়োজন করেছে এইচএসবিসি বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, পরদিন শনিবারও একই মঞ্চে গান শোনাবেন তিনি। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি গান করবেন চট্টগ্রামেও।একসময় সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে একাধিক স্টেজ শোতে মাতিয়ে তুলেছিলেন তিনি। তবে এরপর বেশ কিছুদিন সংগীতাঙ্গন থেকে দূরে ছিলেন। মঞ্চে ফেরা প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমীন বলেন,
“এক বছরেরও বেশি সময় পর গান নিয়ে মঞ্চে ফিরছি, এটা আমার জন্য দারুণ আনন্দের। আমার প্রিয় গানগুলোর পাশাপাশি শ্রোতাদের পছন্দের গানও গাইব। এখন নিয়মিত মহড়া করছি, মঞ্চে ওঠার আগে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছি।”
সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্ণ করা এই শিল্পী আরও বলেন,
“গান আমার অস্তিত্ব, আমার ভালো লাগা, আমার আনন্দ। এত বছর ধরে গান নিয়েই আছি, গানই আমার জীবন। সেই আনন্দের জায়গায় ফেরার অনুভূতি সত্যিই অন্য রকম।”এই আয়োজনে সাবিনা ইয়াসমীনের গানের সঙ্গে সঙ্গত করবেন ১৬ জন সুপরিচিত বাদ্যযন্ত্রী, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন মনিরুজ্জামান, ফোয়াদ নাসের বাবু, মনোয়ার হোসেন, চন্দন দত্ত ও উজ্জ্বল সিনহা। বনানীর একটি স্টুডিওতে তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত মহড়া করছেন তিনি। লাইভ অর্কেস্ট্রার সঙ্গে তাঁর পরিবেশনা শ্রোতাদের জন্য হতে যাচ্ছে এক দারুণ অভিজ্ঞতা!এর আগে ২০১৭ সালে “শতবর্ষের বাংলা গান”, ২০১৬ সালে “চোখ যে মনের কথা বলে”, ২০১৯ সালে “আমার পৃথিবী তুমি” সহ একাধিক আয়োজনে গান করেছেন সাবিনা ইয়াসমীন। এবারের আয়োজন নিয়ে এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান বলেন:
“তিনি আমাদের গর্ব। ছয় দশকের সংগীতযাত্রায় অসংখ্য অমর গান উপহার দিয়েছেন তিনি। তাঁর মন্ত্রমুগ্ধকর কণ্ঠ বাংলা গানের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ‘আমি আছি থাকব’ অনুষ্ঠানে তাঁকে উদ্যাপন করতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করছি।”কিছুদিন সংগীতজগত থেকে দূরে থাকার কারণ ছিল তাঁর শারীরিক অসুস্থতা। ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়মিত সিঙ্গাপুরে যেতে হয়েছিল। তবে এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। নিজেই বলেন,
“আলহামদুলিল্লাহ, এখন ভালো আছি। আল্লাহর রহমত, দেশবাসীর দোয়া আর মনের জোরেই বিপদ কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।”মাত্র ১৩ বছর বয়সে, ১৯৬৭ সালে “আগুন নিয়ে খেলা” সিনেমায় প্রথম গান করেন তিনি। এরপর একের পর এক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন। সর্বশেষ ২০২০ সালে কবরী পরিচালিত “এই তুমি সেই তুমি” ছবির গানে কণ্ঠ দেন, যেখানে তিনি প্রথমবারের মতো সুরকার হিসেবেও কাজ করেছেন।