সরকারের সুলভ মূল্যের মাংস, ডিম ও দুধ দ্রুত শেষ, সরবরাহ বাড়ানোর দাবি ক্রেতাদের

পবিত্র রমজান উপলক্ষে রাজধানীর ২৫টি স্থানে সুলভ মূল্যে গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি, পাস্তুরিত দুধ ও ডিম বিক্রি শুরু করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে অধিকাংশ পয়েন্টে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই পণ্য শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই খালি হাতে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন, ফলে সরবরাহ বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছেন ক্রেতারা।
সোমবার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিক্রি শুরু হলেও দুপুরের আগেই অধিকাংশ পণ্য শেষ হয়ে যায়। শাহজাদপুর পয়েন্টে গরুর মাংস ৬০ কেজি, মুরগি ৬০ কেজি, ডিম ১২০০ পিস ও দুধ ৮০ লিটার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, যা বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে যায়। বিশেষ করে গরুর মাংসের চাহিদা বেশি থাকায় ১২টার আগেই তা ফুরিয়ে যায়।
বাজারে দাম বেশি থাকায় সাধারণ মানুষ এখন এই ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র থেকেই পণ্য কিনতে বেশি আগ্রহী। শাহজাদপুর পয়েন্টের বিক্রেতা জানান, আগের দিনের তুলনায় আজ ভিড় আরও বেশি ছিল এবং বরাদ্দকৃত পণ্য দ্রুত বিক্রি হয়ে গেছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারের তুলনায় এখানে দাম কিছুটা কম হওয়ায় তাদের আগ্রহ বেশি, তবে পণ্যের সরবরাহ আরও বাড়ানো উচিত।
রাজধানীর খামারবাড়ি পয়েন্টেও সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিক্রি শুরু হয় এবং দুপুর ১২টার মধ্যেই পণ্য শেষ হয়ে যায়। এখানে গরুর মাংস ৬০ কেজি, মুরগির মাংস ৮৮ কেজি, ডিম ২০২০টি ও দুধ ২১১ লিটার বরাদ্দ ছিল। অনেক ক্রেতা মাংস কিনতে এসে না পেয়ে ফিরে গেছেন।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতিদিন ৬০ হাজার পিস ডিম, ৬ হাজার লিটার দুধ, ২ হাজার কেজি ব্রয়লার মুরগি এবং ২ থেকে ২.৫ হাজার কেজি গরুর মাংস সরবরাহ করা হবে। তবে বিভিন্ন পয়েন্টে বরাদ্দকৃত পণ্য আরও কম থাকায় সরবরাহ বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
এ কার্যক্রমে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএফএ), দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অংশীজন এবং প্রান্তিক খামারিরা সহযোগিতা করছে।
বর্তমানে খুচরা বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা, তরল দুধ ১০০-১১০ টাকা এবং ডিম প্রতি ডজন ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে সরকার নির্ধারিত সুলভ মূল্যে এসব পণ্য কম দামে কিনতে পারছেন ক্রেতারা, যদিও সরবরাহ কম থাকায় অনেকে পণ্য না পেয়েই ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।
এছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গণি রোড), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), মিরপুরের ষাটফুট রোড, আজিমপুর মাতৃসদন, নয়াবাজার (পুরান ঢাকা), বনশ্রী, হাজারীবাগ, আরামবাগ (মতিঝিল), মোহাম্মদপুর (বাবর রোড), কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিক নগর), শাহাজাদপুর (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি-বনানী, কামরাঙ্গীর চর, খিলগাঁও, নাখালপাড়া, সেগুনবাগিচা, বসিলা, উত্তরা (হাউজ বিল্ডিং), রামপুরা, মিরপুর ১০, কল্যাণপুর, তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) ও কাকরাইল।