Bangladesh - BanglaHajj & UmrahReligionUK - BanglaWorld - Bangla

সন্তান কি বাবা-মায়ের হয়ে হজ করতে পারবে? ইসলামিক দৃষ্টিকোণ

হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি প্রতিটি সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য জীবনে একবার ফরজ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে সুরা আল-হজের মাধ্যমে এর গুরুত্ব স্পষ্টভাবে ব্যক্ত হয়েছে। হাদিসেও হজের ফজিলত ও বিধান সম্পর্কে বহুবার আলোচনা করা হয়েছে।

ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আকরা ইবন হাবিস (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ, হজ কি প্রতি বছর ফরজ, নাকি জীবনে একবার?” জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, “জীবনে একবার হজ করা ফরজ। এর অধিক যদি কেউ করে, তবে তা তার জন্য অতিরিক্ত (নফল)।” (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১৭২১)

অন্য এক হাদিসে, আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, “সর্বোত্তম আমল কোনটি?” তিনি বললেন, “আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা।” এরপর প্রশ্ন করা হলো, “তারপর কোনটি?” তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা।” আবার প্রশ্ন করা হলো, “তারপর কোনটি?” তিনি বলেন, “হাজ্জে মাবরূর (মাকবুল হজ)।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৪২৯)

যদি কেউ হজের নিয়ত করে থাকেন কিন্তু তা আদায়ের পূর্বেই মারা যান, তবে তার পক্ষ থেকে অন্য কেউ হজ করতে পারেন। হাদিসে এর স্পষ্ট অনুমোদন রয়েছে। ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, জুহায়না গোত্রের একজন মহিলা রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, “আমার আম্মা হজের মানত করেছিলেন, তবে তিনি হজ আদায় না করেই ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারি?” রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তার পক্ষ থেকে তুমি হজ আদায় করো। তুমি কি মনে করো, যদি তোমার আম্মার ওপর কোনো ঋণ থাকতো, তাহলে তুমি কি তা পরিশোধ করতে না? সুতরাং, আল্লাহর হক আদায় করে দাও, কেননা আল্লাহর হকই সবচেয়ে অধিক আদায়যোগ্য।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৭৩২)

একটি ঘটনা বিদায় হজের সময় ঘটে, যেখানে খাস’আম গোত্রের এক মহিলা রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, “আমার আব্বা বৃদ্ধ এবং অসুস্থ। তাঁর ওপর হজ ফরজ হয়েছে, কিন্তু তিনি সওয়ারীর ওপর বসে থাকতে পারছেন না। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ আদায় করতে পারি?” রাসুল (সা.) উত্তরে বলেন, “হ্যাঁ, পারবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৭৩৪)

উল্লেখিত হাদিসসমূহ থেকে স্পষ্ট হয় যে, কোনো ব্যক্তি যদি জীবদ্দশায় হজের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আদায় করতে ব্যর্থ হন বা হজের নিয়ত করে মৃত্যুবরণ করেন, তবে তার সন্তান বা অন্য কেউ তার পক্ষ থেকে হজ আদায় করতে পারেন। এটি ইসলামের দয়া ও সুবিচারেরই অংশ, যা প্রত্যেক বিশ্বাসী মুসলমানের জন্য সহজ এবং কল্যাণকর বিধান প্রদান করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button