পবিত্র শবে-বরাত আজ: সৌভাগ্যের মহিমান্বিত রজনী

আজ শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, পবিত্র শবে-বরাত। এদিনের গভীর রাতজুড়ে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও নিষ্ঠার সঙ্গে এ মহিমান্বিত রজনী পালন করবেন।
শবে বরাতের ফজিলত ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সৌভাগ্যের রাত হিসেবে পরিচিত এবং এ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য দয়ার দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। নিচে শবে বরাতের কিছু ফজিলত উল্লেখ করা হলো—
১. গুনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ
হাদিসে এসেছে, শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করে বলেন—
“আছে কি কেউ ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করবো।
আছে কি কেউ রিজিক প্রার্থনাকারী? আমি তাকে রিজিক দেবো।
আছে কি কেউ বিপদগ্রস্ত? আমি তাকে মুক্তি দেবো।”
(ইবনে মাজাহ: ১৩৮৮)
২. তাকদির বা ভাগ্য নির্ধারণের রাত
বিভিন্ন হাদিস ও ইসলামিক গবেষকদের মতে, এই রাতে এক বছরের তাকদির নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ, কার জীবদ্দশা কতদিন, কার রিজিক কেমন হবে, ইত্যাদি বিষয় আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করেন।
৩. রহমত ও বরকতের রাত
শবে বরাতে আল্লাহর অসীম রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়। যারা এই রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন, তারা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করেন।
৪. কবরবাসীদের জন্য দোয়ার উত্তম সময়
শবে বরাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো কবর জিয়ারত করা এবং মৃত আত্মীয়-স্বজনদের জন্য দোয়া করা।
৫. ইবাদতের বিশেষ ফজিলত
এই রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দোয়া ও ইস্তিগফার করা বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) নিজেও শবে বরাতে দীর্ঘ সময় ইবাদত করতেন।
৬. গুনাহ মাফের দরজা উন্মুক্ত থাকে
হাদিসে এসেছে—
“আল্লাহ তাআলা শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাতে সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দেন।”
(ইবনে মাজাহ: ১৩৯০)
শবে বরাতে করণীয় আমল:
- নফল নামাজ পড়া
- কোরআন তিলাওয়াত করা
- তওবা ও ইস্তিগফার করা
- জিকির-আজকার করা
- মৃতদের জন্য দোয়া করা
- দরিদ্র ও অসহায়দের দান-সদকা করা
যেসব কাজ এড়িয়ে চলা উচিত:
- বিধর্মীদের মতো আতশবাজি বা আনন্দ উৎসব করা
- বিনা প্রমাণে শবে বরাতকে বিশেষ খাবারের রাত বানানো
- ইবাদতের নামে বিদআত ও কুসংস্কার পালন করা
শবে বরাত আত্মশুদ্ধি, তওবা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের রাত। তাই এই রাতকে ইবাদতের মাধ্যমে কাটানো উচিত এবং আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত কামনা করা উচিত।