Hajj & UmrahReligion

কাবাঘরের তাওয়াফ: এক মহাজাগতিক অধ্যায়

তাওয়াফ শব্দের অর্থ হলো প্রদক্ষিণ বা চক্কর দেওয়া। ইসলামে কাবা শরিফকে কেন্দ্র করে সাতবার প্রদক্ষিণ করাকে এক তাওয়াফ ধরা হয়। কাবাঘর, যা পৃথিবীতে আল্লাহর প্রথম ঘর হিসেবে পরিচিত, এটি তাওয়াফের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও শ্রদ্ধা প্রকাশের প্রতীক।

আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুই কোনো না কোনো কেন্দ্রকে ঘিরে ঘূর্ণায়মান। গ্যালিলিও প্রথম দেখিয়েছিলেন, পৃথিবীসহ গ্রহগুলো সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। এরপর গবেষকরা দেখেছেন, গ্যালাক্সি, ক্লাস্টার, সুপার ক্লাস্টার, এমনকি ব্ল্যাকহোলও এক কেন্দ্রকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে:
“ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডলের সবকিছুই আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত।”
(সূরা আন-নূর: ৪১)

ঠিক তেমনই, হজের সময় যখন মুসলিমরা কাবাঘরের চারপাশে তাওয়াফ করে, তখন এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় আচার নয়। বরং এটি মহাবিশ্বের সমস্ত সৃষ্টির সাথে একাত্ম হয়ে আল্লাহর নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলার একটি প্রতীকী বহিঃপ্রকাশ।বিজ্ঞান বলে, পরমাণুর ক্ষুদ্রতম কণা ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনও নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান। কাবাঘরের তাওয়াফও যেন সেই একই নীতির প্রতিফলন, যেখানে প্রতিটি বিশ্বাসী এক মহাজাগতিক নিয়ম মেনে আল্লাহর প্রশংসায় লিপ্ত হয়।

তাওয়াফ শুধু একটি ধর্মীয় বিধান নয়, বরং এটি সৃষ্টির চিরন্তন নিয়মের অংশ। মহাবিশ্বের মতোই, মুসলিমরা তাওয়াফের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ এবং মহাজাগতিক নিয়মের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে।

এই কারণেই, কাবাঘরের তাওয়াফ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতাই নয়, এটি মহাবিশ্বের সাথে সংযুক্ত এক অলৌকিক অধ্যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button